ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ার টইটং পাহাড়ী এলাকার মুর্তিমান আতংক ‘নইব্যা ডাকাত’ অধরা!

nabu dakat pekuaমুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :::

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকার বাসিন্দাদের আতংকের নাম নবু হোসেন ওরফে নইব্যা ডাকাত। যার নাম শুনলেই টইটং বিভিন্ন পাহাড়ী গ্রামের বাসিন্দারা ভয়ে তটস্থ থাকে। প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে এলাকায় নইব্যা ডাকাত ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না।

 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ৭/৮ বছর ধরে টইটং ইউনিয়নের বিশাল পাহাড়ী এলাকায় আস্তানা গড়ে তোলে নইব্বা ডাকাত অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা, বাংলা মদ তৈরী, ইয়াবা ব্যবসা, বন বিভাগের ছড়া থেকে অবৈধ উপায়ে বালু উত্তোলন, পাহাড়ি এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পাহাড়ে বসবাসকারী স্থানীয়দের নির্যাতন, চাঁদাবাজি, বন বিভাগের গাছ চুরিসহ এমন কোন অপকর্ম নাই যা সন্ত্রাসী নইব্যা ডাকাত ও তার বাহিনী সংগঠিত করছেনা। গত সোমবার ৫ জুন টইটংয়ের পাহাড়ি এলাকা অভিযান চালিয়ে ওই নইব্যা ডাকাতের মেয়ের জামাই ইসমাইলসহ তার বাহিনীর অপর এক সদস্যকে দেশীয় দুইটি এক বন্দুকসহ গ্রেফতারও করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ। এ নিয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ বাদী অস্ত্র আইনে মামলাও দায়ের করেছে। গত এক মাস পূর্বে পেকুয়া থানা পুলিশ নইব্যার জামাই ইসমাইলের বাড়ী থেকে বিপুল পরিমান বাংলা মদসহ মদ তৈরীর সরঞ্জামাদিও উদ্ধার করেছিল। এ ঘটনায় পেকুয়া থানা পুলিশ বাদী মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে থানায় মামলা করেছিল।

 স্থানীয়রা জানান, টইটংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি গ্রামের জামাই-শাশুরের অত্যচারে সাধারন গ্রামবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন পূর্বে নইব্যা বাহিনীর সেকেন্ড ইন্ড কমান্ড ইসমাঈল গ্রেফতারের ফলে এলাকায় কিছুটা হলেও স্ব:স্থির নি:স্বাস ফিরে এসেছে। এবার স্থানীয়দের পক্ষ থেকে জোরালো দাবী উঠেছে, দ্রুত সময়ে নইব্যা বাহিনীর প্রধান নবু হোসেন ওরফে নইব্যা ডাকাত গ্রেফতারের। জানা গেছে, পেকুয়ার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ডাকাত নইব্যাকে নানা ভাবে সহায়তা করার পাহাড়ে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে নইব্যা বাহিনী। টইটংয়ের পাহাড়ি এলাকা মধুখালী থেকে বন বিভাগের ছড়া থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ উপায়ে বালু উত্তোলন করছেন নইব্যার নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। আর পূর্ব সোনাইছড়ি এলাকায় নইব্যার বাড়ীর সামনেও মেশিন বসিয়ে অবৈধ উপায়ে বালু দেদারসে বালু উত্তোলন করছেন ডাকাত নইব্যা।

 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ১৯৯৪ সালে চকরিয়া থানায় ডাকাত নইব্যার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন টইটং জালিয়ার চাং গ্রামের মিয়াজানের স্ত্রী। মিয়াজানকে সেসমকে হত্যা করেছিল ডাকাত নইব্যার নেতৃত্বে একদল লোক। আর এ মামলাটি বর্তমানে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যার এসটি মামলা নং ৮৩/৯৪ইং। এছাড়াও নইব্যার বিরুদ্ধে একটি নারী নির্যাতন মামলায় যাবজ্জীবন সাজাও রয়েছে।

 স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের পূর্ব অংশের কিছু পাহাড়ি এলাকায় নইব্যা নানান ধরনের অপরাধ সংগঠিত করছে। গত ৫ জুন নইব্যার মেয়ের জামাই অস্ত্রসহ পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে নবু হোসেন ওরফে নইব্যা ডাকাতের ব্যক্তিগত মুফোফোনে ৭ জুন রাত ১১মিনিটে এ প্রতিবেদকের মোবাইল থেকে ফোন করা হলে রিসিভ না করায় বক্তব্য সংযোজন করা সম্ভব হয়নি।

পেকুয়া থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম খান জানান, অপরাধ করে কেউ পার পাবেনা। পুলিশ অবস্থান সব সময় অপরাধীদের বিরুদ্ধে। তিনি এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: